আল আকসা মসজিদ।

Back to Ask Report

avatar

Anonymous 2 years ago

আল আকসা মসজিদের কেন এত গুরুত্ব। এটি সম্পর্কে জানতে চায়।

ইসলাম
  • avatar
    Anonymous - 2 years ago
    ইসলামের তিন পবিত্র স্থানের মধ্যে অন্যতম হল ‘আল আকসা মসজিদ’।এটি মুসলমানদের প্রথম কিবলা। ইবাদতের জন্য এই তিন জায়গায় যাওয়া বৈধ ও অনেক নেকীর কাজ। পৃথিবীর অন্যান্য ইবাদত গৃহে নামাজ আদায়ের চেয়ে এ গৃহে নামাজ আদায়ের সওয়াব অনেক বেশি। এখান থেকে রাসুল (সা:) কে মেরাজে জান্নাতে উঠিয়ে নেয়া হয়, সেখানে রাসূল (সা:) সমস্ত নবীদের নামাজের ইমামতি করেন। রাসূল (সাঃ) বলেছেন, ”ঘরে একাকি সালাত আদায়ে এক গুণ সাওয়াব, মসজিদে সালাত আদায়ে ২৫ গুণ সওয়াব, মসজিদে নব্বি (মদিনায়) ও মসজিদে আকসায় ৫০ গুণ সওয়াব এবং মাসজিদুল হারামে (কাবা শরীফে) এক লাখ গুন সওয়াব”। - ইবনে মাজাহ ইসলামের পবিত্রতম স্থান বাইতুল মুকাদ্দাস বা মসজিদ আল-আকসায় অসংখ্য নবী – রাসূলদের স্মৃতি বিজড়িত ঐতিহাসিক জেরুজালেম শহর বর্তমানে অভিশপ্ত ইয়াহুদিরা অবৈধভাবে দখল করে আছে। যেখানে আজো অসংখ্য নবী – রাসূলের সমাধি বিদ্যমান। বাইতুল মুকাদ্দাসের প্রতিষ্ঠা মুসলিম হল হযরত ইব্রাহিম (আ) কর্তৃক পবিত্র কাবা ঘর নির্মাণের ৪০ বছর অতিক্রান্ত হওয়ার পর তাঁর নাতি বনি ইসরাইলের প্রথম নবী হযরত ইয়াকুব (আ) ঐতিহাসিক প্রসিদ্ধ শহর জেরুজালেমে মসজিদ আল-আকসা নির্মাণ করেন। তারপর হযরত সুলাইমান (আ) জিন জাতির মাধ্যমে এ পবিত্র মসজিদ পুনঃনির্মাণ করেন। ইসলামের আগমের পর রাসূল (সাঃ) এর ইন্তেকালের কয়েক বছর পর ৬৩৮ খ্রিস্টাব্দে মুসলমানদের অধীনে আসে। ইসলামের প্রাথমিক যুগে এ মসজিদটি কিছু দিনের জন্য মুসলমানদের কেবলা হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছিল। মসজিদটি দুটি বড় ও ১০টি ছোট গম্বুজ বিশিষ্ট মসজিদটিতে প্রকাশ পেয়েছে নির্মাণশৈলীর এক মনোমুগ্ধকর প্রতিচ্ছবি। বিভিন্ন সময়ে মসজিদটি সংস্কারে ব্যবহার করা হয় মার্বেল, স্বর্ণসহ নানা ধরণের মূল্যবান ধাতু ও পাথর। এটিকে মুসলমানদের পবিত্র স্থান হিসেবে ঘোষণা দিয়েছে ইউনেস্কো। ১৫ জুলাই ১০৯৯ সাল। ইসলাম ও মুসলমানদের জন্য এক বেদনাদায়ক দিন। সে দিন অযোগ্য মুসলিম শাসকদের জন্য খ্রিস্টান বাহিনী সমগ্র সিরিয়া ও ফিলিস্তিন দখল করে। এর পরই ঘটতে থাকে হৃদয় বিদারক অসংখ্য ঘটনা। যা মুসলমান ও ইসলামের জন্য খুবই কষ্টদায়ক। খ্রিস্টানরা ৭ জুন ১০৯৯ সালে প্রথম জেরুজালেমে অবস্থিত ‘বায়তুল মুকাদ্দাস বা আল-আকসা’ মসজিদ অবরোধ করে এবং ১৫ জুলাই মসজিদের ভেতর প্রবেশ করে ব্যাপক পরিবর্তন করে। তারপর তারা মসজিদটি তাদের উপাসনালয় গির্জায় পরিণত করে। বায়তুল মুকাদ্দাস পুনরুদ্ধার করা হয় ২৩ মার্চ ১১৬৯ সালে। ফাতেমীয় খেলাফতের রাজত্বকালে খলিফার নির্দেশে সেনাপতি সালাহউদ্দিন আইয়বি রাহমাতু্ল্লাহি আলাইহি গভর্ণর ও সেনাপ্রধান হয়ে মিসরে আগমন করেন। ২০ সেপ্টেম্বর ১১৮৭ খ্রিস্টাব্দে রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের মাধ্যমে তিনি আল-আকসা মসজিদ ও জেরুজালেম নগরী মুসলমানদের অধিকারে নিয়ে আসেন। ২ অক্টোবর ১১৮৭ খ্রিস্টাব্দে সেনাপতি ও গভর্ণর সুলতান সালাহউদ্দিন আইয়ুব কর্তৃক বায়তুল মুকাদ্দাস মুক্ত হওয়ার পর জেরুজালেমে দীর্ঘ প্রায় একশতাব্দি ব্যাপী মুসলমানরা খ্রিস্টানদের অত্যাচার থেকে মুক্ত ছিল। ২ অক্টোবর ১১৮৭ খ্রিস্টাব্দে সেনাপতি ও গভর্নর সুলতান সালাহউদ্দিন আইয়ুবি আনুষ্ঠানিকভাবে বিজয়ীবেশে বায়তুল মুকাদ্দাসে প্রবেশ করেন। সালাহউদ্দিন আইয়ুবি কর্তৃক বায়তুল মুকাদ্দাস মুক্ত হওয়ার পর জেরুজালেমে দীর্ঘ প্রায় এক শতাব্দিব্যাপী মুসলমানরা খ্রিস্টানদের অত্যাচার থেকে মুক্ত ছিল। ১৯৬৭ সালে আরবদের সাথে যুদ্ধের পর মসজিদটি দখল করে নেয় ইসরাইল। তারপর থেকে মসজিদটিতে ইবাদতের জন্য দখলদার বাহিনীর ইচ্ছা-অনিচ্ছার ওপর তাকিয়ে থাকতে হয় ফিলিস্তিনের সাধারণ মুসলমানদের। ১৯৪৮ সালে ফিলিস্তিনি ভূমি অবৈধভাবে দখলের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠিত হয় ইহুদি রাষ্ট্র ইসরাইল। এর ধারাবাহিকতায় ১৯৬৭ সালে আরবদের সাথে যুদ্ধে আল-আকসা মসজিদ দখল করে নেয় দেশটি। তারপর থেকেই এটি নিয়ন্ত্রণ করে দখলদার বাহিনীরা। আরব-ইসরাইল যুদ্ধের পর আল-আকসা মসজিদ পুরোপুরি বন্ধ করে দিয়েছিল ইসরাইলরা। ১৯৬৯ সালে মসজিদটিতে অগ্নিসংযোগও করেছিল তারা। এরপর নানা বিধি-নিষেধ আর শর্ত পূরণের মাধ্যমে সেখানে ইবাদতের সুযোগ পেতেন সাধারণ মুসলমানেরা। তারপরও তারা বিভিন্ন অজুহাতে আল-আকসা মসজিদ ফিলিস্তিনিদের জন্য বন্ধ করে দেয়। ২০০৩ সালে জেরুজালেমে অবৈধ বসতি স্থাপনকারী ইহুদিদের আল-আকসায় প্রবেশের ‍অনুমতি দেয় ইসরাইল। এরপর থেকে সঙ্কট আরো ঘনীভূত হয়। বিভিন্ন সময়ে ইহুদিরা মসজিদের অভ্যন্তরে প্রবেশ করে মুসলমানদের ওপর হামলা চালায়। ইহুদিদের কাছে এই স্থানটি টেম্পল মাউন্ট হিসেবে পরিচিত। তাদের দাবি এই মসজিদের নীচে রয়েছে তাদের দুটি প্রাচীন মন্দির। অপরদিকে খ্রিস্টানরাও আল-আকসা মসজিদকে তাদের পবিত্রতম স্থান হিসেবে দাবি করে আসছে।

Authentication required

You must log in to post an answer.

Log in

Similar Questions