কনস্টিপেশন (কোষ্ঠকাঠিন্য) এ ভুগলে করণিয়।
Published: 2021-04-17 07:30:00

কনস্টিপেশন একটি প্রচলিত সমস্যা। এটি একটি কষ্টদায়ক রোগ। এই রোগে প্রায় পৃথিবীর ১০% মানুষ ভোগে।স্বাভাবিক জীবন যাপনে এটি বাঁধার কারণ হয়ে দাঁড়ায়। যদি সপ্তাহে তিনবারের চেয়ে অন্ত্রের গতি কম হয় তবে এটাকে কোষ্ঠকাঠিন্য বা কনস্টিপেশন বলে। প্রায় কম বেশি মানুষ এই সমস্যার সম্মুখিন হয়। গর্ভবতী নারীদের মাঝেও এই সমস্যা দেখা দেয়। বিভিন্ন কারণে কনস্টিপেশন হতে পারে। গবেষকদের মতে, খাদ্যাভাসের কারণে এটি হয়ে থাকে। তাছাড়া বিভিন্ন ধরনের ওষুধ খেলে। যেমন- ব্যথার, উচ্চ রক্তচাপের, গ্যাস্টিকের বা ক্যালসিয়ামের ওষুধ খেলে কনস্টিপেশন হয়। থাইরয়েডের সমস্যা থাকলে এই রোগে ভুগতে হয়।
কিছু খাবার খেলে এই সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে পারেন। খাবার গুলো হল -
১. ইসুপগুলের ভুষি খাওয়া : 
এটি পানির সাথে মিশিয়ে খেলে কোষ্ঠকাঠিন্য সমস্যা থেকে দূরে থাকা যায়। প্রতিদিন সকালে খালি পেটে ইসুপগুলের ভূষি খেলে কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হয়।
২. আপেল : 
একটি মাঝারি আকারের আপেলে ৪.৪ গ্রাম ফাইবার থাকে। আপেল স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকারী। আপেল যদি খোসাসমেত খান তবে এটি খুব ভাল। যেহেতু এতে ফাইবার আছে এবং ফাইবার খাবার হজমে সাহায্য করে এবং মলত্যাগেও সাহায্য করে।
৩. নাশপাতি :
কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে নাশপাতির জুরি নেই। রাতে খাওয়ার পর নাশপাতি খেলে কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হয়। এটি ক্যালসিয়ামেরও যোগান দেয়। একটি মাঝারি আকারের নাশপাতিতে আছে ৫.৫ গ্রাম ফাইবার। এত প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি থাকে। আপনি বিভিন্ন উপায়ে নাশপাতি খেতে পারেন। যেমন- কাঁচা বা রান্না করে বা সালাদ করেও খেতে পারেন।
৪. বেশি পরিমানে পানি পান :
পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি পান হতে পারে কনস্টিপেশন থেকে মুক্তির উপায়। একজন পূর্ণ বয়স্ক মানুষকে ৮-১০ গ্লাস পানি পান করা দরকার।
৫. গাজর :
গাজরে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি থাকে। গাজর হজম ক্ষমতা বাড়ায়। তাছাড়া গাজরের ক্যারোটিন গুলো হৃৎপিণ্ডের নানা অসুখের ওষুধ হিসেবে কাজ করে । গাজর কাঁচা বা সবজিতে দিয়েও রান্না করে খেতে পারেন। গাজর অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট হিসেবে কাজ করে। তাই শরীরের প্রতিরোধ ক্ষমতাকে বাড়িয়ে দেয়।
৬. পালং শাক :
পালং শাকে ভিটামিন সি এবং ভিটামিন কে রয়েছে। এক কাপ রান্না করা পালং শাকের মধ্যে ৪.৩ গ্রাম ফাইবার থাকে। পালং শাক হিমোগ্লোবিন বাড়াতে সাহায্য করে।
৭. মিষ্টি আলু :
মিষ্টি আলুতে প্রচুর ফাইবার থাকে। কোষ্ঠকাঠিন্য দূরীকরণে এটি সহায়তা করে। মিষ্টি আলুতে বিটা ক্যারোটিন, ভিটামিন সি, বি৬ আছে। একটি মিষ্টি আলু থেকে ২৬০ ভাগ ভিটামিন পাওয়া যেতে পারে। এটি আপনি কাঁচা বা সিন্ধ করে খেতে পারেন।
৮. মসুর ডাল :
রান্না করে ১/২ কাপ মসুরের ডালে ৭.৮ গ্রাম ফাইবার থাকে। মসুরের ডালকে গরিবের প্রোটিন বলা হয়। মসুরের ডালে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার থাকায় খাদ্য হজমে সহায়তা করে।
৯. কফি :
কফি একটি জনপ্রিয় পানীয়। অনেক ব্যক্তি আছেন যারা কফি ছাড়া চলতেই পারে না। ঘুমের ভাব কাটাতে অনেক মানুষ কফি খেয়ে থাকে। কিন্তু এটি কোষ্ঠকাঠিন্যের জন্যও বেশ উপকারী। কফি পেটকে নরম করে। কিন্তু বেশি কফি পান করলে ডায়রিয়া হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। তাই দিনে ২/৩ কাপের বেশি কফি পান করবেন না।
১০. পেঁপে :
পেঁপেকে একটি সবজি বা ফল বলতে পারি। পেঁপেতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে মিনারেল, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং ভিটামিন। পেঁপে স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকারি। পেঁপেতে এনজাইম আছে যা খাবার হজমে সহায়তা করে। যারা কোষ্ঠকাঠিন্যতে ভোগেন তারা কাঁচা বা পাকা পেঁপে নিয়মিত খেতে পারেন।
কোষ্ঠকাঠিন্য ঠেকাতে আমরা নিয়মিত সবুজ শাক-সবজি খাব। বাইরের খাবার বা জাঙ্ক ফুড পরিহার করতে হবে। তবে আমরা একটা সুস্থ লাইফ কাটাতে পারব।