মাথা ব্যথা আমরা কিভাবে অনুভব করি?
Published: 2021-05-30 15:25:00

চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায় মাথাব্যথা বলতে আমাদের মাথা, গলা এবং মেনিঞ্জেসের বিভিন্ন স্নায়ু এবং পেশীতে অনুভূত ব্যথাকে বোঝায়। মস্তিষ্কের নিজ থেকে ব্যথা অনুভবের ক্ষমতা নেই। আমাদের মাথায় বিভিন্ন স্নায়ু এসে শেষ হয়েছে। তাই মাথা ব্যথা মস্তিষ্কে নয় বরং সেটা হয়ে থাকে মস্তিষ্কের আশপাশের কোন জায়গায়। মাথা ব্যথা কে বিজ্ঞানী গণ দুই ভাগে ভাগ করেছেন। যথা : প্রাইমারি ও সেকেন্ডারি।
প্রাইমারি মাথাব্যথা (Primary Headache) : এই জাতীয় মাথা ব্যথার মূলত তিনটি কারণ রয়েছে। প্রথম কারণ টি হল মাইগ্রেন।
- মাইগ্রেন : মাইগ্রেন কি এটা আমরা প্রায় সকলেই জানি। যার মাইগ্রেন আছে সেই জানে এই ব্যথার তীব্রতা কতখানি। আমাদের সেরেব্রাল কর্টেক্সের বিভিন্ন অংশে রক্ত প্রবাহ কমে যাওয়াই মূলত এর জন্য দায়ী। মাইগ্রেনের উপসর্গের মধ্যে রয়েছে আলো ও গোলমালের প্রতি সংবেদনশীলতা, বিভিন্ন বিষয়ের প্রতি বিতৃষ্ণাবোধ, মাথার যে কোন একপাশে খুব ব্যথা অনুভব করা, বমি হওয়া ইত্যাদি।
- দুশ্চিন্তা : মাথা ও গলার বিভিন্ন পেশীতে অতিরিক্ত স্ট্রেসের ফলে বা আবেগিক নানা কারণে দুশ্চিন্তাজনিত মাথা ব্যথা হয়। এ ধরনের মাথা ব্যথাগুলোর সময় মাথায় একধরনের ঝিম ধরা অনুভূতি হয় এবং সেই সাথে মাথার দুই পাশে তীব্র হতে হয়ে থাকে। চিকিৎসকদের মতে এর সাথে মাইগ্রেনের খুব ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে।
- ক্লাস্টার : এই ধরনের মাথা ব্যথা সাধারণত কয়েক দিন বা সপ্তাহ এমনকি কয়েক মাস ধরে থাকতে পারে। এদের উৎপত্তিও মাথার যেকোন এক পাশেই হয়ে থাকে। ক্লাস্টার টাইপের মাথা ব্যথার প্রকৃত কারণ উদঘাটন করা না গেলেও ধারণা করা হয় যে এটি রক্তপ্রবাহের পরিবর্তনের ফলে হয়ে থাকে। কারণ অ্যালকোহলের মত যেসব উপাদান রক্ত প্রবাহকে প্রভাবিত করে তারা এই ধরনের মাথা ব্যথার ক্ষেত্রে আরো উত্তেজক ভূমিকা পালন করে থাকে। তাছাড়া মস্তিষ্কে অতিরিক্ত রক্ত প্রবাহের ফলেও প্রাইমারি টাইপের মাথা ব্যথা হয়ে থাকে। যেমন- ক্যাফেইন আমাদের মস্তিষ্কে রক্ত প্রবাহকে নিয়ন্ত্রণ করে থাকে। এখন কারো যদি নিয়মিত ক্যাফেইন নেবার অভ্যাস হয়ে থাকে আর সে হঠাৎ করে যদি সেটা বন্ধ করে তবে মস্তিষ্কে অতিরিক্ত প্রবাহের ফলে তার মাথা ব্যথা হতে পারে।
সেকেন্ডারি মাথা ব্যথা (Secondary headache) : এই মাথা ব্যথা গুলো মূলত ইনফেকশন, মাথায় আঘাত, টিউমার, জ্বর, হাইপোগ্লাইকেমিয়া ইত্যাদি কারণে হয়ে থাকে। মাথা ব্যথা যে রকমই হোক না কেন তা যদি মাঝে মাঝে হয়ে থাকে তবে আমাদের উচিত হবে কোন চিকিৎসকের পরামর্শ নেয়া। কারণ অনেক সময় দেখা যায় খুব ছোট সমস্যা বড় রূপ ধারণ করতে পারে।