পেঁপে খাওয়ার উপকারিতা।
Published: 2021-04-12 07:30:00

একটি জনপ্রিয় ফল বা সবজি হলো পেঁপে। পেঁপের বৈজ্ঞানিক নাম Carica Papaya. এই গাছের বিভিন্ন অংশ যেমন- পাতা, ফল, বীজ, ফুল এবং মূল ব্যবহার করে ওষুধ তৈরি করা হয়। পেঁপে স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকারী। পেঁপে ক্যান্সার, ডায়বেটিস, ডেঙ্গু জ্বর এবং অন্যান্য চিকিৎসার জন্য ব্যবহার করা হয়। পেঁপেতে পেপেইন নামের রাসায়নিক থাকে। এটি কার্বোহাইড্রেট এবং চর্বি গুলো ভেঙে দেয়। পেঁপেতে কার্পাইন রাসায়নিকও আছে। যা পরজীবী মারা যেতে পারে এবং কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্র কে প্রভাবিত করতে পারে। পেঁপে একটি নরম, মাংসল ফল যা বিভিন্ন ধরনের রন্ধন পদ্ধতিতে ব্যবহার করা যেতে পারে। পেঁপেতে ভিটামিন সি রয়েছে। একটি মাঝারি পেঁপেতে রয়েছে ১২০ ক্যারোরি, ৩০ গ্রাম কার্বোহাইড্রেট, ৫ গ্রাম ফাইবার এবং ১৮ গ্রাম চিনিসহ প্রোটিন ২ গ্রাম রয়েছে। পেঁপের অনেক উপকারিতা রয়েছে। পেঁপে খেলে অনেক রোগ থেকে আরাম পাওয়া যায়। যেমন -
১. ক্যান্সার : গবেষণায় দেখা গেছে যে, পেঁপে খাওয়ার ফলে কিছু লোকের মধ্যে পিত্তথলি ও কোলেস্টেরল ক্যান্সার প্রতিরোধে হতে পারে।পেঁপে রান্নার পরিবর্তে কাঁচা খাওয়াটাই উত্তম। পেঁপেতে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, ফ্ল্যাভোনোক্সিড রয়েছে যা দেহে ক্যান্সারের কোষ তৈরিতে বাঁধা দেয়।
২. ডেঙ্গু জ্বর : মশা দ্বারা সংক্রমিত একটি বেদনাদায়ক রোগ হল ডেঙ্গু জ্বর। গবেষণায় দেখা গেছে যে, পেঁপে পাতার নির্যাস গ্রহণের ফলে ডেঙ্গুজ্বরে আক্রান্ত ব্যক্তিরা অনেকটা আরাম অনুভব করে।
৩. ডায়াবেটিস: গবেষণায় দেখা গেছে যে, টাইপ 1- ডায়াবেটিস যুক্ত ব্যক্তিরা যারা উচ্চ ফাইবারযুক্ত ডায়েট গ্রহণ করেন তাদের রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা কম থাকে এবং টাইপ 2- ডায়াবেটিসে আক্রান্তদের রক্তে শর্করা, এবং ইনসুলিনের মাত্রা উন্নত হতে পারে। একটি ছোট পেঁপেতে প্রায় ৩ গ্রাম ফাইবার রয়েছে, যা কেবল ১৭ গ্রাম কার্বোহাইড্রেট এর সমতুল্য।
৪. হাঁপানি প্রতিরোধ : যারা প্রচুর পরিমাণ পুষ্টিকর খাবার উচ্চ পরিমাণ গ্রহণ করে তাদের হাঁপানি হওয়ার ঝুঁকি কম থাকে। এর মধ্যে একটি পুষ্টি হলো বিটা-ক্যারোটিন। যা পেঁপেতে রয়েছে।
৫. হজমে সহায়তা : পেঁপেতে পাপাইন নামক একটি এনজাইম থাকে। যা খাবার হজমে সহায়তা করে। পেঁপেতে প্রচুর পরিমাণে পানি রয়েছে। এটি কোষ্ঠকাঠিন্য রোধ করতে সহায়তা করে এবং স্বাস্থ্যকর হজমশক্তি প্রচার করতে সাহায্য করে।
৬.হৃদরোগ : পেঁপেতে থাকা ফাইবার, পটাশিয়াম এবং ভিটামিনের উপাদান গুলো হৃদরোগ থেকে মুক্তি পেতে সহায়তা করে।
৭. ক্ষত নিরাময় : প্রাথমিক গবেষণায় দেখা যায় যে, পুনরায় খোলা অস্ত্রোপচারের ক্ষতের কিনারায় পেঁপে ফলের সমন্বয়ে ডেসিং প্রয়োগ করা হাইড্রোজেন পারক্সাইড ড্রেসিংয়ের সাথে পুনরায় খোলা ক্ষতটির চিকিৎসার তুলনায় নিরাময় সময় এবং হাসপাতালে ভর্তির দৈর্ঘ্য হ্রাস করে।
৮. চুলের যত্নে : পেঁপে চুলের জন্যও খুবই উপকারি। কারণ এটিতে সিবাম উৎপাদনের জন্য প্রয়োজনীয় ভিটামিন এ রয়েছে। যা চুলের আর্দ্রতা বজায় রাখে। ত্বক এবং চুল সহ সমস্ত শারীরিক টিস্যুগুলির বিকাশের জন্য ভিটামিন এও প্রয়োজনীয়। পেঁপে সরবরাহ করতে পারে ভিটামিন সি এর পর্যাপ্ত পরিমাণে খাওয়ার জন্য কোলাজেন তৈরি এবং রক্ষণাবেক্ষণের জন্য ত্বকের গঠন সরবরাহ করা প্রয়োজন।
৯. ওজন কমায় : পেঁপেতে থাকা ম্যাজিকাল এনজাইম পেপেইন আপনার শরীরে থেরাপিউটিক সুবিধা প্রদান করে। এটিতে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে, এটি প্রকৃতির মূত্রবর্ধক এবং ন্যূনতম ক্যালোরিযুক্ত ফাইবারযুক্ত। পেঁপেতে ক্যালরির পরিমাণ খুব কম থাকে এবং ফাইবার বা আঁশ বেশি থাকে বলে যারা ওজন কমাতে চান তারা বেশি বেশি পেঁপে খেতে পারেন।
১০. কোলেস্টেরল কমায় : পেঁপেতে ভিটামিন সি এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট আছে যা ধমনীতে কোলেস্টেরল জমতে বাধা দেয়।
নিয়মিত পেঁপে খেলে শ্বাস-প্রশ্বাসের সমস্যা অনেকাংশে কমে যায়। তাছাড়া মেছতা ফুসকুড়ির দাগও খুব সহজে দূর করে। কাচা পেপে সবজি ও সালাদ হিসেবে ব্যবহার করতে পারেন। তাই প্রতিদিন খাবার তালিকায় রাখুন পেঁপে।